হিযবুত তওহিদ এমন একটি জঙ্গী দলের নাম যে ক্ষনে ক্ষনে রুপ বদলায় । কট্টর পন্থী জঙ্গী দল হিসেবেই প্রথমে আত্মপ্রকাশ করে । কিন্তুু জঙ্গী দলসমূহের লিস্টে নাম আসার সাথে সাথেই শ্লোগান, লিখা,বই , পত্রিকা , সমাবেশ সবকিছুতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে বাহ্যিক ভাবে । সরকরের আমলা ও সমাজের সকলের পরিচিত মিডিয়ার বড় বড় ব্যত্তিদের নিয়ে মিটিং সমাবেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মব্যবসায়ের বিপক্ষে মুখরোচক সমালোচনা করে এখন জঙ্গী তকমা ঢাকার কূট কৌশলে ব্যস্ত । এখন কিন্তুু ভেতরে ভেতরে চলছেই জঙ্গী মিশন । আর যখনই তাদের মুখোস খুলে দেয়া হয় তখনই চিরচারিত বুলি ” এসব অপপ্রচার ” ”এসব মিথ্যে ” ”এরা জামাআত শিবির” ”” এরা হেফাজত ” ইত্যাদি বুলি ছেড়ে ইজ্জত বাচানোর চেস্টা করে ।
চলুন প্রথমে সংক্ষেপে তাদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরি
টাঙ্গাইলের করটিয়ার ধন্যাঢ্য জমিদার পরিবারের সন্তান মোহাম্মদ বায়জিদ খান পন্নী। উচ্চ শিক্ষিত এবং মেধাবী বায়জিদ খান পন্নী পরিবারের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগে শক্ত অবস্থান তৈরী করে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারি বায়জিদ পন্নী বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে ১৯৭১ এর ডিসেম্বরে দেশত্যাগ করে প্রথমে পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যে আত্মগোপন করে বসবাস করতে থাকে।১৯৮০ সালে জেনারেল জিয়ার আশ্বাসের ভিত্তিতে বায়েজিদ পন্নী বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে। ইতিমধ্যে বায়েজিদ পন্নীর ছোটো ভাই সেলিম পন্নী নিজেকে স্থানীয় ভাবে ইসলামি তাত্বিক ও চিন্তাবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিলেন। বড় ভাইয়ের দেশে প্রত্যাবর্তন তাকে আরও দুঃসাহসী করে তোলে। আশির দশকের শেষ দিকে সেলিম পন্নী নিজেকে ‘ইমামুজ্জামান’ বা জগৎ এর সর্বশ্রেষ্ঠ ইমাম রূপে ঘোষনা করে নিজেদের আকিদা বা বিশ্বাস প্রচার করা শুরু করে। এসময় বায়েজিদ পন্নী নিয়মিত মধ্যপ্রাচ্য সফর করে সংগঠন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্হান করেন।১৯৯২ সালে বায়েজিদ পন্নী হেজবুত তওহিদ নামে নিজস্ব সংগঠন তৈরি করে এবং সংগঠনের ইশতেহার প্রকাশ করে। দলটি ইশতেহারে প্রচলিত শাসন ব্যবস্হার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে এবং প্রচলিত শাসন ব্যবস্হাকে উচ্ছেদে শারিরীক শক্তি প্রয়োগকে বাধ্যতামূলক ঘোষনা করে। নিজেদের নিজস্ব মতধারারার বাইরের সকলকেই অমুসলিম হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করার বিনিময়ে হলেও আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিজ্ঞা এবং মানব সৃষ্ট সকল আইনকে প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে দলটি নিজেরা কট্টর জঙ্গী সন্ত্রাসী রূপে আত্ম প্রকাশ করে।১৯৯৬ সালে বায়েজিদ পন্নী “This is not true Islam” প্রকাশ করে, বইতে ইশতেহারের বিষয় গুলিকে আরও যুক্তিযুক্ত করার চেষ্টা করা হয় ধর্মিয় বিকৃত সব যুক্তির মাধ্যমে, এমনকি ফজর ওয়াক্তের নামাজকে ফরজ হিসেবে স্বীকার না করা এবং প্রচলিত আযান কে কুকুরের ডাকের সাথেও তুলনা করা হয়েছে এই বইতে। এরপর হিজবুত তওহিদ নিজেদের সদস্যদের জন্য নামাজ পড়ার নিয়েমে পরিবর্তন করে বিকৃত ভাবে নামাজকে পড়া বাধ্যতামূলক করে।এই বিকৃত নামাজের ভিডিও ইউটিউবে সহজেই পাওয়া যায়। ২০০০ সালে তারা প্রথম সংহিসতা শুরু করে বরিশালের গৌরনদীতে
২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) ও শাহাদাত–ই–আল হিকমা নামের চারটি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করে। দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় ২০০৯ সালের প্রথমদিকে দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা হেজবুত তওহিদ ও হিজবুত তাহরিরসহ আরও আটটি সংগঠনকে কালো তালিকাভুক্ত করে এবং এগুলোকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। এগুলোর মধ্যে ধর্মীয় উস্কানিমূলক কার্যক্রমসহ নানা অভিযোগে বর্তমান সরকার হিজবুত তাহরিরকে নিষিদ্ধ করে।
হেজবুত তওহিদ ছাড়াও কালো তালিকাভুক্ত অন্য সংগঠনগুলো হচ্ছে– উলামা আঞ্জুমান আল বাইয়্যিনাত, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (আইডিপি), ইসলামী সমাজ, তৌহিদ ট্রাস্ট, তা–আমির উদ–দ্বীন বাংলাদেশ (সংগঠনটিকে হিজবে আবু ওমর নামেও ডাকা হয়) ও আল্লার দল। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে এসব সংগঠনের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেয়। জেলা ও থানা পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে কাজ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো ছাড়াও হেজবুত তওহিদসহ আরও আটটি সংগঠন জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। এরপরই মন্ত্রণালয় থেকে এসব সংগঠনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। এসব সংগঠনের সঙ্গে কারা জড়িত, অর্থের জোগানদাতা কারা, তা খুঁজে বের করতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু হিজবুত তাহরির ছাড়া কালো তালিকাভুক্ত আর কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি সরকার ।
।২০০৩ সালে বরিশালেই প্রথম জিহাদী লিফলেট বিতরন।পরবর্তীতে বায়জিদ পন্নী “দাজ্জাল/Dajjal” নামে আরেকটি বই প্রকাশ করে, যেখানে ইহুদী এবং খৃষ্টানদের দাজ্জালের দোসর আখ্যা দিয়ে এদের নির্মূলে সর্বশক্তি নিয়োগের আদেশ করা হয়েছে। ২০০৭ এর দিকে দেশের সমগ্র উত্তরান্ঞ্চলে জেএমবি, হুজি এবং হিজবুত তওহিদ মিলিত ভাবে জঙ্গী তৎপরতা পরিচালনা করেছে।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে সংগঠনটি চিটাগাং প্রেস ক্লাবের সামনে জিহাদি লিফলেট বিতরন কালে তৎকালিন প্রধান রিয়াদ সহ তিন চারজন গ্রেফতার হয়।
এরপর দলটি নিজেদের প্রচার কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন আনে এবং নিজেদের কে সংস্কারমনা ,সাহিত্য প্রেমী উদার ইসলামি দল হিসেবে অনলাইনে মাঠে ময়দানে তুলে ধরতে শুরু করে। তাদের লেখা জঙ্গী সংশ্লিস্ট সবধরনের বইগুলো গোপন করে ফেলে । তাদের পত্রিকার নম ছিল ” দেশের পত্র” । সেটা বদলে পত্রিকার নাম রাখে ” বজ্রশক্তি” । দলটি এভাবে সংস্কারের মোড়কে প্রভাবিত করে প্রাথমিক সদস্য করার পর তাদের নিজেদের কট্টর মতবাদ সদস্যকে ধীরে ধীরে আত্মস্হ করতে বাধ্য করে।
কিন্তুু আইন–শৃংখলা বাহিনীর ‘কালো তালিকায়’ভুক্ত উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠন হেজবুত তওহিদের তৎপরতা চলছে প্রকাশ্যেই। রাজধানীতেও দিন–দুপুরে ভাসমান হকারদের মতোই তারা বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন ও লঞ্চে উঠে এসব লিফলেট, বই, সিডি বিক্রি ও বিতরণ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামের নামে উগ্র ও ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারের সময় সংগঠনটির কর্মীদের আইন–শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা আটক ও গ্রেফতার করলেও তাদের কার্যক্রম থেমে নেই।
জঙ্গীবাদি মিশন থেমে নেই হিযবুত তওহীদের ঃ গত 12 march 2017 তে বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হয় ”চট্টগ্রামে জোটবদ্ধ হয়েছে তিন জঙ্গি সংগঠন। এ সংগঠনগুলো হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ এবং আহলে হাদিস। তাদের কাজে সমন্বয় করছে ইসলামী ছাত্র শিবির। শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গি সংগঠনের ১৭ নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লিফলেট, জিহাদী বই এবং সাংগঠনিক নথিপত্র জব্দ করা হয়।
ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, ঈদগাহ এলাকার একটি লন্ড্রি দোকানে জঙ্গিরা গোপন বৈঠক করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ, আহলে হাদিস এবং ছাত্র শিবিরের নেতা কর্মী রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি তাদের বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। এসব জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় করছে জামায়াত–শিবিরের কয়েকজন নেতা।’ তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। আগামীকাল সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
ডবলমুরিং থানার ওসি (তদন্ত) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই এক সময় জামায়াত কিংবা শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানেও কয়েকজন জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পক্ত রয়েছেন। ”
এক ঝলকে ইসলামের নামে ভন্ডামি হিযবুত তওহীদের
মনগড়া দাজ্জাল থিওড়ি ও প্যারেড নামায
https://www.youtube.com/watch?v=7MEU1UlkTQs&t=4s
তার মনগড়া দাজ্জাল থিওড়ির বিপক্ষে আমাদের অখন্ডনীয় জবাব
https://plus.google.com/collection/ADa5UE
জঙ্গী তকমা থেকে বাচতে
বাচতে সাম্যের বানীর আড়ালে দলিল বিহীন লাগাম ছাড়া প্রলাপ ঃ গৌতম বুদ্ধ ও শ্রীকৃষ্ণকে নবী বলে ঘোষনা দেয় হিযবুত তওহীদ ।
https://www.youtube.com/watch?v=WmJasppPHR0
সকল সচেতন নাগরিকের একান্ত কর্তব্য নিজের অন্ধত্ব ঝেড়ে ফেলে এমন ধরনের দলকে সর্বক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান করা এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আকুল আবেদন যে জঙ্গী হিযবুত তওহীদকে চিরতরে নিষিদ্ধ করে সমাজকে সন্ত্রাস মুক্ত জঙ্গী মুক্ত করুন ।