Nurul Amin

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উত্থানের শঙ্কা

facebook sharing button
twitter sharing button

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেশ কিছু অপরাধী গ্রুপ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জঙ্গিবাদের উর্বর চিত্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে আমাদের কাছে। এটি আমরা জানি। বিষয়টি নিয়ে আমরা সচেতন আছি এবং আমরা কাজ করছি। যদিও এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

 

 

ক্যাম্পে এপিবিএন ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। আমরা আশা করছি সকল সংস্থার সমন্বয়ে আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবো। বাংলাদেশের স্বার্থ পরিপন্থি যারা কাজ করবে তাদের শক্ত হাতে প্রতিরোধ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজারে ‘সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রতা মোকাবিলায় বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং বিট পুলিশিং কার্যক্রমে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমাপন্থা প্রতিরোধ বিদ্যামান চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নির্ধারণের জন্য আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (এন্টি টেররিজম ইউনিট) এসএম রুহুল আমিন।

 

 

বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের (ইউএনওডিসি) এর যৌথ উদ্যোগে কর্মশালায় তিনি আরো বলেন, বলপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাথে সে দেশের কিছু কিছু লোকের যোগাযোগ রয়েছে। ফলে মিয়ানমার থেকে সহজে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক নিয়ে আছে। এসব কিছুই আমাদের নজরে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের বিদ্যামান শক্তি সামর্র্থ্য দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।

 

 

কর্মশালায় ‘বাংলদেশে যুবসমাজ উগ্রবাদের সাথে জড়িত হওয়ার পেছনে সাতটি প্রক্রিয়ার কথা জানানো হয়। একই সাথে জঙ্গীবাদের ৯ টি লক্ষণের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া উগ্রবাদে জড়িত থাকার জন্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামসজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রভাব, ধর্মীয় ভাবাদর্শের প্রভাব এবং উগ্রগোষ্ঠীর প্ররোচনাকেও দায়ি করা হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরনের জন্য পরিবার থেকে শুরু করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম এবং সংবাদকর্মীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরা হয়।

 

 

এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কেন জঙ্গীবাদ বা উগ্রবাদের উত্থান হতে পারে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো.মাহফজুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি এখন কক্সবাজারের টেকনাফ উখিয়া ছাড়িয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ১১টি জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। গেল চার মাসে রোহিঙ্গাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে মামলা ২৬১টি। যেখানে শুধু খুনের মামলা ৩১টি। হত্যাচেষ্টা মামলা ১২টি, অস্ত্র আইনের মামলা হয়েছে ২৪টি, মাদকের ১৩ টি, নারী নির্যাতন ৯টি এবং অন্যান্য আরো আটটি মামলা রয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় রোহিঙ্গারা কিভাবে উগ্রবাদী হয়ে উঠছে। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান রাজনৈতিক কাউন্সিলর ব্র্যাডলি কোটস, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজ মো. মাহফুজুর রহমান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এপিবিএন’র অতিরিক্ত ডিআইজি (এফডিএমএন) জামিল হাসান, কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুল ইসলাম। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কাউন্টার টেরোরিজম এডিশন ডিআইজি (প্রশাসন) কানিজ ফাতেমা।